কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থানুকূল্যে বিধান চন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষকদের কৃষি দ্রব্য দেওয়া হল
মিলন খামারিয়া, মোহনপুর: কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ICAR – AICRP on Forage Crops’ -এর আর্থিক সহযোগিতায় বিধান চন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পিছিয়ে পড়া তপশিলি জাতির কৃষকদের বিভিন্ন কৃষি দ্রব্য দেওয়া হল। আজ নদিয়া জেলার চাকদাহ, রানাঘাট-২, হাঁসখালি, কৃষ্ণগঞ্জ – এই চারটি ব্লকের ৩০ জন চাষিদের হাতে মুগ, তিল বীজ, বাদাম বীজ, কীটনাশক, বীজ শোধক, স্প্রে মেশিন ইত্যাদি বিতরণ করা হয়।
বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে চাষের স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষতি হচ্ছে।কিন্তু খাদ্যশস্যের পরিমাণ ও গুণগত মান বজায় রাখার জন্য মিলেট(জোয়ার,বাজরা,রাগি) জাতীয় শস্য চাষকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি মাটির উর্বরতা শক্তি বজায় রাখার জন্য ডাল জাতীয় শস্যের চাষ বেশি করে করা উচিত। ভুট্টা চাষ ও ধান চাষের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে আজকের আলোচনায়। ধান, ভুট্টা, মুগের খোসা ও গাছ – সবই গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায় বলেও জানান এই প্রোজেক্ট ইনচার্জ ড. কল্যাণ জানা।
আজ আলোচনায় জৈব চাষের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়। মাটিতে বসবাসকারী উপকারী জীবাণুর সংখ্যা বাড়াতে গেলে জৈব চাষ করতেই হবে আমাদের। জৈব চাষের জন্য গোবর সার, ভার্মি কম্পোস্ট, নিম খোল, বাতাম খোল প্রভৃতি ব্যবহার করা উচিত। অতিরিক্ত সার ব্যবহার না করে ন্যানো ইউরিয়া ব্যবহার করারও পরামর্শ দেন ড. জানা।
ন্যানো ইউরিয়া, ডিএপি, ইউরিয়া প্রভৃতি বিভিন্ন ফসলের পাতায় স্প্রে করা নিয়েও আলোচনা করা। অতিরিক্ত ফসল চাষে মাটিতে অণুখাদ্যের ঘাতটি দেখা যাচ্ছে। সেইজন্য মাইক্রোনিউট্রেন্ট মিক্সার যেমন জিঙ্ক সালফেট, বোর্যাক্স, এমোনিয়াম মলিট্রেট প্রভৃতি জমিতে প্রয়োগ করা উচিত বলেও ড. জানা জানান চাষিদের সামনে আজ।
‘ইউনাইটেড নেশন জেনারেল এসেম্বলি’ ২০২৩ সালকে ‘ইন্টারন্যাশনাল ইয়ার অফ মিলেট’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। যেহেতু মিলেট জাতীয় শস্যের খাদ্যগুণ অনেক বেশি তাই ধান, গম, ভুট্টা প্রভৃতি চাষের পাশাপাশি মিলেট চাষে জোর দেওয়া হয়েছে। খাদ্য তালিকায় মিলেট জাতীয় খাদ্য রাখার জন্যও মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে।
আজকের কৃষি দ্রব্য বিতরণ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে সহকারী অধ্যাপক কল্যাণ জানা জানান যে,” কৃষির উন্নতির জন্য কৃষকদের সচেতনতা প্রয়োজন। আজ উপস্থিত কৃষকদের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে তাদের সচেতন করা হয়েছে। আশাকরি আজকের আলোচনায় তারা সমৃদ্ধ হয়েছেন। খাদ্যে আত্মনির্ভরশীল হয়েছি আমরা, এবার পুষ্টিতেও আত্মনির্ভরশীল হবো। আর গড়ে তুলবো আত্মনির্ভর ভারত। শক্তিশালী কৃষকই আত্মনির্ভরশীল ভারত গড়তে পারবে বলে আমি মনে করি।”