বিশেষ সংবাদদাতা, কাকদ্বীপ: রেশনের ১৫ হাজার কুইন্ট্যাল চাল পাচারের অভিযোগ উঠল কাকদ্বীপের এক রেশন ডিস্ট্রিবিউটরের বিরুদ্ধে। খাদ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে গোডাউনে হানা দেওয়ার পর থেকে দুর্নীতির অভিযোগ সামনে চলে আসে। জেলাশাসকের নির্দেশে ঘটনার তদন্ত শুরু করে জেলা খাদ্য দপ্তর। দিনের পর দিন রেশনে ব্যাপক দুর্নীতি করে ফুলে ফেঁপে উঠেছিল ব্যবসা। এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপে। জেলাশাসকের নির্দেশে ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত রেশন ডিস্ট্রিবিউটরকে শো-কজ করা হয়েছে। অভিযুক্ত ওই রেশন ডিস্ট্রিবিউটারের নাম অমিত কুমার ভগত। ঘটনার পর থেকে বেপাত্তা অভিযুক্ত। খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি মাসের ২ তারিখ কাকদ্বীপে রেশন দোকানগুলি পরিদর্শনে আসেন খাদ্য দপ্তরের আধিকারিকরা। অভিযোগ, কয়েকজন ডিলারের থেকে তাঁরা জানতে পারেন, এলাকার ডিস্ট্রিবিউটর অর্ধেকের বেশি দোকানে রেশন সামগ্রী সময়মতো পৌঁছে দেন না। ফলে সঠিক সময়ে গ্রাহকরা রেশন পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
বিষয়টি শোনার পরে দপ্তরের আধিকারিকরা ডিস্ট্রিবিউটরের গোডাউনে পৌঁছে যান। সে সময় বেশ কিছু গরমিল ধরা পড়ে বলে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। দেখা যায়, ওই ডিস্ট্রিবিউটরের গোডাউনে ৪ লক্ষ ২০ হাজার কেজি চাল মজুত থাকার কথা। কিন্তু তা নেই। ডিস্ট্রিবিউটরের কাছে আধিকারিকরা জানতে চান, কেন চাল গোডাউনে মজুত নেই। উত্তরে অমিত জানান, অন্য গোডাউনে মাল আছে, তা ডিলারদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। কিন্তু ৫ ডিসেম্বর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও ৩০ জনের বেশি ডিলার রেশন সামগ্রী পাননি বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে খাদ্য দপ্তরের আধিকারিকরা ওই ডিস্ট্রিবিউটরের বিরুদ্ধে খাদ্য দপ্তরে রিপোর্ট জমা দেন। অমিতকে শো-কজ করা হয়। কেন এই গরমিল, তা সাত দিনের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে। উত্তর সন্তোষজনক না হলে ডিস্ট্রিবিউটরের লাইসেন্স বাতিল হতে পারে বলে দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে। এ বিষয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা বলেন, রেশনের ১৫ হাজার কুইন্ট্যাল চাল ১০০ জন রেশন ডিলারকে ডিস্ট্রিবিউট করার কথা ছিল। অভিযুক্ত ডিস্ট্রিবিউটর ওই চাল সরবরাহ করেননি। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত ডিস্ট্রিবিউটার মূলত কাকদ্বীপ ও নামখানা ব্লকের বিভিন্ন রেশন ডিলারদের রেশনের খাদ্য সামগ্রি সরবরাহ করত। নামখানা ও কাকদ্বীপ ব্লকের সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই অন্য ডিস্ট্রিবিউটরের হাতে এই দায়িত্বভার তুলে দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোরতম শাস্তির পদক্ষেপ করা হচ্ছে।