28 C
Kolkata
June 16, 2025
রাজ্য

কয়লা পাচার কাণ্ডে অভিযুক্ত অনুপ মাঝির আত্মসমর্পণ ও জামিন

কলকাতা, ১৪ মে: অবশেষে আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন কয়লা পাচার কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালা। পরে জামিনে মুক্ত হলেন তিনি। ১০ লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দেওয়া হয়েছে তাঁকে। তবে এটি নিঃশর্ত জামিন নয়। জামিনে মুক্ত থাকাকালীন পালন করতে হবে বেশ কিছু শর্ত। আগামী ২১ মে এই মামলার চার্জ গঠন। জামিনের সময় তাঁর বিরুদ্ধে দেওয়া শর্তগুলো হল, আগামী ২১ মে এই মামলায় চার্জ গঠনের পর ট্রায়াল শুরু হবে। কয়লাকাণ্ডের মূল মাথা লালাকে সেই ট্রায়ালে অংশগ্রহণ করতে হবে। সিবিআই- তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে। তাঁর বাড়ি পুরুলিয়া জেলার নিতুরিয়া থানা এলাকায়। যেখানে তাঁর বাড়ি, সেই এলাকার ৫০ কিলোমিটারের বাইরে যেতে পারবেন না অনুপ মাঝি।

এর আগে এই মামলার তদন্তে সিবিআই-এর হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করে এবং গ্রেপ্তারি এড়াতে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন অনুপ মাঝি। তাঁর আইনজীবী মুকুল রোহতগি। তিনি শীর্ষ আদালতে আর্জি জানান, রাজ্য সরকারের অনুমতি ছাড়া সিবিআই কয়লা পাচারের তদন্ত করতে পারে না। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে কোনও রক্ষা কবচ দিতে রাজি হয়নি। শীর্ষ আদালতের পক্ষ থেকে জারি হয়নি কোনও অন্তর্বর্তী নির্দেশ। অবশেষে বাধ্য হয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন লালা।

আজ মঙ্গলবার সকালে আসানসোল সিবিআই আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। সম্প্রতি কয়লা পাচার মামলায় চার্জশিট পেশ করে তদন্ত প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন আসানসোল সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। আগামী ২১ মে সিবিআই এই মামলার চার্জশিট পেশ করার আগেই আদালতে আত্মসমর্পণ করেন কয়লা পাচার কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত অনুপ মাঝি। সেই আত্মসমর্পণের পর জামিন পেলেন লালা।

এদিকে লোকসভা ভোট চলাকালীন লালার আত্মসমর্পণ ও জামিন নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে যথেষ্ট জলঘোলা শুরু হয়েছে। ২০২০ সালে কয়লা পাচার কাণ্ডের তদন্ত শুরু করে সিবিআই। সেই তদন্তে লালার ঘনিষ্ঠ গুরুপদ মাঝি সহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। লালার বাড়ি ও অফিসেও তল্লাশি চালানো হয়। সিবিআই সূত্রের খবর, কয়লা পাচার কাণ্ডে লালার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিল এনামুল হক। এই এনামুল হক আবার গরু পাচারকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত। লালা কয়লা পাচারের সময় এই এনামুল হকের সিন্ডিকেটের সাহায্য নিত বলে তদন্তে জানতে পারে সিবিআই। সেখান থেকে কয়লা পাচার হতো উত্তরবঙ্গ সহ প্রতিবেশী রাজ্যগুলিতে। সিবিআইয়ের পাশাপাশি কয়লা পাচার মামলায় তদন্ত করছে ইডিও। কিন্তু সেই মামলায় কোনও রক্ষাকবচ নেই লালার। ফলে এবিষয়ে ইডি নতুন করে কোনও পদক্ষেপ করে কি না, সেদিকেই নজর রাজ্যের মানুষের।

প্রসঙ্গত গত কয়েক মাস ধরেই লালার অনুসন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছে সিবিআই। শুধু রাজনৈতিক নেতাদের মদত ছাড়াও লালার সঙ্গে পুলিশ-প্রশাসন, ইস্টার্ন কোল্ডফিল্ড, রেল কর্তাদের একাংশেরও যোগাযোগ রয়েছে বলে তদন্তের পর দাবি করে সিবিআই। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আরও দাবি, ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল অবধি এই কয়লা পাচার করা হয়েছে। আসানসোল-দুর্গাপুর-পুরুলিয়া-বীরভূম এলাকায় লালা ও তাঁর ঘনিষ্ঠেরা বেআইনি ভাবে কয়লা পাচার করেছে।

Related posts

Leave a Comment