শিলিগুড়ি, ৩০ মে: শববাহী কফিনের মধ্যে মাদক পাচার। মঙ্গলবার সকালে পাচারকারীদের এই অভিনব ফন্দি ধরা পড়ল শিলিগুড়ির ফুলবাড়িতে। এসটিএফ-এর হাতে ধরা পড়ল চারজন পাচারকারী। ধৃতদের মধ্যে এক মহিলা সহ তিনজন পুরুষ রয়েছে। উদ্ধার হয়েছে ৬৪ কেজি গাঁজা। পাচারের কাজে ব্যবহৃত অ্যাম্বুলেন্স ও কফিনটিকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ধৃতদের নাম সমীর দাস, অপূর্ব দে, পাপ্পু মোদক ও সরস্বতী দাস।
জানা গিয়েছে, সারারাত গাড়ি চালানোর পর আজ সকালে ত্রিপুরা থেকে অ্যাম্বুলেন্সটি উত্তরবঙ্গে এসে পৌঁছায়। এভাবে ব্যস্ত হাইওয়ে ধরে বেশ এগোচ্ছিল গাড়িটি। আর একটু রাস্তা পেরলেই বিহার। কিন্তু হাইওয়ে ছেড়ে শিলিগুড়ির আমবাড়ি ক্যানেল রোডে ঢুকতেই ঘটে বিপত্তি। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযান চালায় বেঙ্গল এসটিএফ। আজ সকাল ন’টার দিকে ক্যানেল রোডে ফুলবাড়ির কাছে গাড়িটিকে আটক করে তারা। এরপর শুরু হয় তল্লাশি। এদিকে অ্যাম্বুলেন্স আটকাতেই গাড়িতে থাকা পাচারকারীরা মেজাজ দেখাতে শুরু করে। মৃতদেহের গাড়ি কেন আটকানো হয়েছে, তার কৈফিয়ত চায় তারা। কিন্তু কোনও কিছুতে ভ্রূক্ষেপ না করেই একের পর এক তল্লাশি করতে থাকে তারা। ফুল দিয়ে সাজানো কাঠের কফিনের ঢাকনা খুলতেই চক্ষু চড়কগাছ পুলিশের। সাদা ধবধবে কাপড় সরাতেই বেরিয়ে আসে ১৮টি প্যাকেট ভর্তি ৬৪ কেজির গাঁজা। এরপর গাড়িতে থাকে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে অভিযোগ দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত পাচার রুখতে প্রশাসনিক সক্রিয়তা যত বাড়ছে, ততই নতুন নতুন উদ্ভাবনী বুদ্ধি খেলছে পাচারকারীদের মাথায়। ত্রিপুরা থেকে বিহারে নিয়মিত পাচার করা হতো এই গাঁজা। পাচারের জন্য অসম ও পশ্চিমবঙ্গের রুট ব্যবহার করা হতো। শুধু তাই নয়, পাচারের জন্য পশ্চিমবঙ্গের রেজিস্ট্রেশন যুক্ত একটি অ্যাম্বুলেন্স ও একটি কাঠের তৈরি কফিন ব্যবহার করা হতো। তার ভিতরে মৃতদেহের মতো সাদা কাপড়ে মুড়ে মাদক দ্রব্য পাচার করা হতো। সাধারণ মানুষ এবং পুলিশ প্রশাসন ঘুনাক্ষরেও টের পেত না। সবাই জানতো কফিনের ভিতরে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। গাড়িতে থাকা পাচারকারীরা মৃতের আত্মীয় বলে পরিচয় দিয়ে দিনের পর দিন অভিনব এই পাচার কাজ চালিয়ে যেত।
previous post