শঙ্কর মণ্ডল: গোপাল দলপতি, হৈমন্তী গাঙ্গুলী, কুন্তল ঘোষ বা অর্পিতা মুখার্জি এই নামগুলি বাংলার সাধারণ মানুষ একেবারেই জানত না। জানার কথাও নয়। কারণ এরা কখনওই কোনও গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক পোস্টে ছিল না। থাকলেও টেলিভিশন ক্যামেরায় এদের দেখানোর প্রয়োজন হয়নি। তাই সাধারণ মানুষের পক্ষে জানাও সম্ভব হয় নি। এদের মধ্যে অর্পিতা ও বর্তমানে গুরুত্ব পেয়ে উঠে আসা হৈমন্তী নাকি অভিনয় জগতে প্রবেশ করেছিল। কিন্তু তা এতটাই নগন্য যে, রুপালী পর্দার সৌজন্যেও এদের পরিচিত করতে পারে নি। তাহলে এদের কি এমন ক্ষমতা ছিল যে, এদের মানুষ লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়েছিল চাকরি পাবার জন্য? আর এরা কী করেই বা বড় বড় নেতার সাথে ছবি তুলতে পারল? মদন বাবু আজ প্রশ্ন তুলেছেন, তার দলের ওপরেই। কিন্তু তার মানে ওনার সাথে ছবি কি নিছকই কাকতলীয়? কেবল সেলফি প্রেমিক? অনেক প্রশ্ন এসে যায়।
আসলে মানি, মানি, মানি কেবল এই একটি জিনিসই এই রাজ্যের সমস্ত দর্শনকে পাল্টে দিয়েছে। আর এই সব কিছুই হয়েছে এক প্রবল শক্তিশালী ক্ষমতার মাধ্যমে। আর মদনবাবু আপনি বলছেন এত পঁচা মালেরা তৃণমূল করে? কেন আপনি জানেন না? আর দুনিয়ার সব পঁচা মালেরাই তো তৃণমূলে আছে। কিন্তু কেবল ডিগ্রি ছাড়া কোনও সঠিক পড়াশোনা করা, সভ্য, ভদ্র, মেরুদণ্ড সোজা হওয়া লোক কখনওই তৃণমূল করতে পারে না। কারণ, এটা মানতেই হবে, তৃণমূলের মাথাটাই পঁচা। তাই ঐ মাথা সমস্ত বিষয়েই ভুল ও অবৈজ্ঞানিক কথা বলেন। আর তারপরেও যারা কেবল তার লয়ে ল দিয়ে যেভাবে লেজ নাড়ান, তাতে ওদের পঁচা ছাড়া আর কিছুই হতে পারে না।
আর সমস্ত বিষয়ে যেভাবে একটা চিঠিংবাজ, সবজান্তার মত বিবৃতি দেয়, তাতে পুরো দলটাই পঁচা, সেটা প্রমাণ করে। তবে হঠাৎ করে বোধোদয় হওয়া বাংলা ভাষা নিয়ে যে কথাগুলো শুভাপ্রসন্ন বলেছেন, তাতে এত আপ্লুত হচ্ছে বিজেপি কেন, তা বুঝতে পারছি না। এর আগেও ওই পঁচা দলের একগাদাপঁচা মালকে গ্রহণ করে ধুয়ে পরিষ্কার করতে গিয়েছিল, তাতে কী পরিণাম হয়েছে? তা থেকে শিক্ষা না হওয়ার জন্য ধিক্কার জানাই। বাংলা ভাষা নিয়ে বিকৃত করা হয়েছে, এবং ইতিহাস প্রকৃত নয় এ কথা আমরা বারবার বলেছি। বামপন্থীরা তো বটেই, কংগ্রেস সহ সব বিজেপি বিরোধীরাই এই বিকৃত ইতিহাসের সমর্থক। হ্যাঁ, তাই লড়াই অনেক দীর্ঘ। এ লড়াই শুধু দুর্নীতির বিরুদ্ধে নয়, এই লড়াই দেশের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। এ লড়াই নিজেদের সংস্কৃতি, দর্শন ও প্রকৃত ইতিহাস রক্ষার লড়াই। এ লড়াই ছিল, আছে ও থাকবে।
next post