April 15, 2025
রাজ্য

এলাকার নাবালিকা বিবাহ রোধে অনন্য নজির কলেজ পড়ুয়া মনিরার

অভিজিৎ হাজরা,শ্যামপুর, হাওড়া: আন্তর্জাতিক শিশু কন্যা দিবসে নাবালিকা বিবাহ প্রতিরোধ ও মানুষকে সচেতন করতে এগিয়ে এলেন সিরাজাম মনিরা। তিনি এক দরিদ্র দিনমজুর পরিবারের প্রতিভাবান মেধাবী কলেজ শিক্ষার্থী। এদিন এই উপলক্ষে মানুষকে সচেতন করতে আয়োজন করেন একটি সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান। তাঁর বাড়ি হাওড়া গ্রামীণ জেলার জয়পুর থানা এলাকায়। তিনি এদিন আমাদের প্রতিবেদককে জানান এক কঠিন কঠোর করুন পরিস্থিতির কথা। মনিরা বলেন, গত মাধ্যমিক পরীক্ষার কয়েক দিন আগে যখন আমি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক সেই সময় জানতে পারি, আমাদের হোস্টেলের এক নবম শ্রেণীর ও এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী দুই নাবালিকার বাড়ির লোকজন ও আত্মীয় পরিজন তাদের কিছু না জানিয়ে বাল্য বিবাহ দেওয়ার চেষ্টা করছে। সেজন্য ওই নাবালিকা ছাত্রীকে এক পাত্রের বাড়িতে রেখে আসা হয়েছে। আর একজনকে পরীক্ষা শেষ করে বাড়িতে গেলে তারও বিবাহ দিয়ে দেবে বলে জানা যায়। সেই পরীক্ষার্থীর কথা মতো মনিরা তাঁর বাবার সহায়তা নিয়ে ওই নাবালিকাকে সুরক্ষিত করে। যা এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। কোনওরকম ভয় ভীতিকে পরোয়া না করে, কোনও পুরষ্কারের আসা না করে, সে এরকম বেশ কিছু সামাজিক কাজ করে যাচ্ছে নিজের মতো করে, টিফিন খরচ বাঁচিয়ে।
হাওড়া জেলার শ্যামপুর থানার, সীতাপুর ফাঁড়ির, আমড়দহ গ্রাম পঞ্চায়েতের বড় ঘু ঘু বেশিয়া-র প্রয়াসের আয়োজনে গতকাল ১১ অক্টোবর ‘আন্তর্জাতিক শিশু কন্যা দিবস ‘। আলোচনা, কবিতা, ছড়া, নাচ, গান, শ্রুতি নাটক মহিলাদের নিজ হাতে তৈরি উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শন করা হয়। আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন আমড়দহ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান জয়ন্ত পাত্র, অধ্যাপক দেবাশিষ কয়াল, সীতাপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ কিষানু জানা, প্রয়াসের ব্রাদার মার্কুস টপ্পো ও প্রয়াস গ্রুপের মেয়েরা। প্রয়াসের প্রায় পঞ্চাশ জন কিশোরী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। টপ্পো বলেন, মনিরা আমাদের অনুপ্রেরণা। তিনি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
উল্লেখ্য, শ্যামপুর এলাকার অধিকাংশ মানুষের দিনযাপন ইট ভাঁটার আয়ের উপর। এখানে শিক্ষার আলো সেভাবে পৌঁচ্ছায়নি। এই এলাকায় ‘প্রয়াস’ মানুষের সচেতনতার লক্ষ্যে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে।

Related posts

Leave a Comment