শঙ্কর মণ্ডল: জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মিঃ কানুনগোকে তিলজলা থানায় হেনস্থার পর রিষড়ায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলকে ১৪৪ ধারা দেখিয়ে যেভাবে পুলিশ বাধা দিল, যা থেকে পুলিশের ভুমিকা ধীরে ধীরে রাজ্যে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের কারণকে শক্তিশালী করল। লোকাল থানাগুলো চোর জোচ্চর, মস্তানদের পাশে থাকা ও সাধারণ মানুষের যে কতখানি ত্রাস হয়েছে, তার জন্য প্রমাণ হিসাবে সোনারপুর কোদালীর ঝর্ণা সর্দার রায় পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দায়ের ও মিডিয়ার সামনে বিবৃতি দিয়ে যে সাহসিকতার পরিচয় দিল, তা যথেষ্ট প্রশংসনীয়।
প্রসঙ্গত ঝর্ণা দেবী ৬ ই এপ্রিল তাঁর মেয়েকে নিয়ে ফেরার সময় তাঁর ব্যাগ ছিনতাই করে ছিনতাইকারী। আর তখনই ঝর্ণাদেবী সোনারপুর থানায় অভিযোগ করতে গেলে অদ্ভূতভাবে তাঁর অভিযোগ না নিয়ে তাঁকে যেভাবে ঘোরানো হয়, তার থেকে পুলিশের সঙ্গে ঐ ছিনতাইকারীর অশুভ সম্পর্ক আছে বলেই মনে হচ্ছে। যদিও এটা শুধু সোনারপুর নয়, এই রাজ্যের সর্বত্র পুলিশের এটাই স্বাভাবিক চরিত্র।
সুতরাং এই রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা যে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে সেটাই প্রমাণ করে। আর এইভাবেই এরাজ্যে অপরাধ রেজিষ্টার করা হয় না।সুতরাং প্রায় ২০ শতাংশ রেজিষ্টার হওয়া রিপোর্ট কেন্দ্রে পাঠানো হয়। আর তার ভিত্তিতেই এই রাজ্যে অপরাধের সংখ্যা কম হয়। তাই ভারতে স্থান পায়।
যাই হোক, একটা বিষয় আজকেও বলতে বাধ্য হচ্ছি, সেটা হল অভিষেক ব্যানার্জী আলিপুরদুয়ারে গিয়ে যেভাবে নাটকীয় ভঙ্গিমায় বক্তব্য রাখলেন এবং যথারীতি ফাটা ক্যাসেটের মতো কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করলেন, বিশেষ করে ১০০ দিনের কাজ নিয়ে এবং কোটি স্বাক্ষর নিয়ে দিল্লী যাবার যেভাবে হুমকি দেখাচ্ছেন, সে ব্যাপারে একটা কথাই বলতে চাই যে, কেন্দ্র যেমন ২৭ নং ধারা অনুযায়ী আপনাদের টাকা আটকে রেখেছেন, সেইরকম আপনাদেরও কোর্টে যাওয়ার অধিকার ঐ সংবিধানেই আছে। তাহলে কোর্টে গেলেই তো সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। এমনিতেই তো চোরেদের বাঁচাতে প্রায়ই কোর্টে যান, এক্ষেত্রে যাচ্ছেন না কেন?
আর দিল্লী গিয়ে আন্দোলন করবেন? ওখানকার পুলিশ যদি আপনার পুলিশের মত ব্যবহার করে, তাহলে ডান্ডার আঘাত খাওয়ার ক্ষমতা আছে তো? এদিকে কুর্মী সম্প্রদায় যেভাবে আন্দোলনের নামে মানুষের হয়রানি করছে চারদিন ধরে, তার সমাধান কী হবে?
এই রাজ্যে মানবাধিকার কমিশন পুরোপুরি বেপাত্তা। তাই একের পর এক ঘটনা মানবাধিকার লঙ্ঘন করলেও তার কোনও বিচার হয় না।আদিবাসী মহিলাদের অন্য পার্টিতে যাওয়ার জন্য দন্ডি খাটানোর যে ঘটনা ঘটলো উত্তরবঙ্গের তপনে, তা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানায়। এই আদিবাসীরা কিন্তু এমনিতেই অসহায়। তাই তাঁরা ওদের জন্য নির্দিষ্ট আইন থাকা স্বত্ত্বেও তার সুবিধা পায় না। এইভাবে এই রাজ্যে চলেছে এক প্রবল অরাজকতা।
যাই হোক, আমাদের এইসব বিষয় নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে আসল সমস্যা অন্ধকারে চলে যাচ্ছে। জেহাদীদের গবেষণা ক্রমশ নিশ্চিন্তে চলছে এই রাজ্যে।
previous post