30 C
Kolkata
June 16, 2025
উত্তর সম্পাদকীয়

এই বাজেট কোন কর্মসংস্থানের?

প্রতীকী চিত্র

শঙ্কর মণ্ডল: নিয়োগ দুর্নীতির কারণে চাকরী প্রার্থীরা এখনও রাস্তায়। ডিএ না পেয়ে সরকারি কর্মচারীরা অনশনে। ফসলের দাম না পেয়ে কৃষকরা ফসল নষ্ট করে চোখের জলে মাটি ভাসিয়ে ফেলছে। অথচ ফোড়েদের দাপটে মানুষ চড়া দামে ফসল কিনছে। একের পর এক তৃণমূল নেতা চুরির দায়ে হেফাজতে। আর এহেন পরিস্থিতিতে রাজ্যে বাজেট পেশ করলেন চন্দ্রিমা দেবী। মুখ দিয়ে মাননীয়া সর্বজ্ঞানী, সর্বগ্রাসী, বিশ্বকবি, সাহিত্যিক, চিত্রকর ও নতুনরূপে আবির্ভূত অর্থনীতিবিদ মুখ্যমন্ত্রী।

বর্তমান বাজেট অনুযায়ী আগামী বছর এই রাজ্যের ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ৬ লক্ষ ৮০ হাজার কোটি টাকা। আর এই ঋণের প্রতি সম্মান জানাতে কৃষক ও যুবকদের ব্যাপক ঋণ গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে তাঁদের ঋণের ব্যবস্থা করেছেন এই বাজেটে। আর এইসব নানান বিষয়ে মানুষের কাছে রং লাগিয়ে সরকারের পক্ষে পরিবেশন করার জন্য অনুপ্রাণিত সাংবাদিকদেরকেও পুরস্কৃত করতে ভোলেননি এই বাজেটে। বাজেটে ৩ শতাংশ মহার্ঘভাতা দিয়ে কিছু অনুপ্রাণিত সরকারি কর্মচারীকে সবুজ আবির মাখিয়ে অনুপ্রাণিত সাংবাদিকদের দিয়ে পরিবেশন করালেও বেশিরভাগ সরকারি কর্মচারী এটাকে ললিপপ বলেই মনে করে। তাঁরা কেন্দ্রীয় হারে ডিএ পেতেই আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন।

তাই মুখ্যমন্ত্রী যখন বিধানসভায় বলেন, এই বাজেট কর্মসংস্থানের বাজেট, তখন প্রশ্ন করতে হয় কোন কর্মসংস্থানের? এখানে কেবল তোলাবাজি, চুরি, জোচ্চুরি, মস্তানীর চাকরি ছাড়া আর কোনও চাকরিই তো নেই। হ্যাঁ, আর একটি বিষয় উল্লেখ না করলে বাজেট আলোচনা একেবারেই অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। সেটা হল ৫ শো টাকার ঘুষ দেওয়া লক্ষীর ভাণ্ডার। এটা অক্ষুণ্ণ রেখেই সেই সঙ্গে এখানে এই ভিক্ষা নিতে নিতে ৬০ বছর বয়স পেরিয়ে গেলে ১ হাজার টাকা বার্ধক্য ভাতা পাবে বলেই ঘোষণা করেছেন।

আর ক্লাবকে টাকা কিংবা দুর্গাপুজায় ডোল ও স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের জন্য উপযুক্ত বরাদ্দ স্বাস্থ্য খাতে কোথায়? আর এই বিভিন্ন বকেয়া মেটানোর ব্যর্থতার প্রসঙ্গে ডিফেন্ড করতে গিয়ে তৃণমূলের ছোট, বড়, মেজ, সেজ সব নেতারা একটাই ফাটা রেকর্ড বাজাচ্ছে। সেটা হল কেন্দ্রের কাছ থেকে বকেয়া টাকা না পাওয়া নিয়ে। এই টাকার পরিমাণ এক একজন নেতা এক এক রকম বলছে। কিন্তু প্রশ্ন হল, এই টাকা যদি কেন্দ্র বিনা কারণে আটকে রাখে, তাহলে অবশ্যই আদালতের দ্বারস্থ হওয়া উচিত রাজ্যের। যেহেতু সেটা করছে না, সেহেতু ধরে নিতে হবে ডাল মে কুছ কালা হ্যায়।এছাড়া রাস্তাশ্রী ইত্যাদি বিশ্রী প্রকল্প তো আছেই। সুতরাং আজকের বাজেট পর্যালোচনা করতে গেলে অর্থনীতির পড়াশোনা আপনার যতটুকু আছে সেটাও ভুলে যাবেন।

যাই হোক, একটি মারাত্মক অভিযোগ করে শুভেন্দু অধিকারী যে বোমা ফাটালেন, তা সারা রাজ্য তো বটেই সমগ্র দেশে হৈচৈ ফেলে দিয়েছে। তা হল নবগ্রামের বিধায়ক কানাই মণ্ডলকে তৃণমূলে থাকা কালীন শুভেন্দু ৫০ লক্ষ টাকা ও একটা স্করপিও গাড়ির বিনিময়ে সিপিএম থেকে তৃণমূলে এনেছিলেন। যা নিয়ে প্রকৃত তথ্য ও সত্যতা জানতে সমগ্র বঙ্গবাসী গভীরভাবে আগ্রহী।

Related posts

Leave a Comment