ভোট কেনার সস্তা রাজনীতি বন্ধ করতে এবং সরকারের ঋণের বোঝা কমাতে এবার রাজ্যের প্রতিটি প্রকল্পে নজরদারি কেন্দ্র সরকারের
সুভাষ পাল, সংবাদ কলকাতা: কথায় বলে, ‘আমদানি আটাননি, খরচ রুপাইয়া’। অর্থাৎ আয় ছাড়া ব্যয় বেশি। যা চরম অদূরদর্শিতা ও সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থ চরিতার্থ করতেই এই কাজ করছে দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্য সরকার। যার বোঝা চাপছে রাজ্যের সাধারণ মানুষের ঘাঁড়ে। এর চরম মাশুল দিতে হবে আগামী প্রজন্মকে। ক্ষমতায় টিকে থাকতে এইসব রাজ্যগুলি দান খয়রাতি করার জন্য পাহাড়প্রমাণ ঋণ করছে বিভিন্ন সংস্থার থেকে। দেশের বেশ কিছু রাজ্য সরকারের ভোট কেনার এই সস্তা নীতিতে এবার রাশ টানতে চলেছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। এবার থেকে রাজ্যের প্রতিটি প্রকল্পের আয়ব্যয়ের হিসেব দিতে হবে কেন্দ্রকে। রাজ্যের নিজস্ব প্রকল্পের অজুহাত দিয়ে ভোট কেনার জন্য যেমন খুশি ঋণ করা যাবে না।
পাশাপাশি, কেন্দ্রের প্রকল্পের টাকায় রাজ্যের প্রকল্প খাতে খরচ করা আটকাতে এটা একটা জরুরি পদক্ষেপ বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। এই মর্মে পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের প্রতিটি রাজ্য সরকারকে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। বাদ পড়েনি বিজেপি শাসিত রাজ্য সরকারগুলিও। এই নিয়ম থেকে ছাড় দেওয়া হয়নি তাদেরকে। তারাও মোদী সরকারের কাছে এই হিসাব দিতে দায়বদ্ধ।
কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে এবিষয়ে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, যেসব প্রকল্পে উপভোক্তার ব্যাঙ্ক একাউন্ট-এ টাকা পাঠানো হয়, তার যাবতীয় হিসেব ‘ডিবিটি ভারত’ নামক একটি পোর্টালে তুলে দিতে হবে রাজ্য সরকারগুলিকে। সব রাজ্যের ক্ষেত্রেই একই নিয়ম লাগু করা হয়েছে। ঐসব প্রকল্প চালানোর ফলে রাজ্যগুলির ওপর ঋণের বোঝা কতটা বাড়তে পারে, তার স্পষ্ট হিসাব পেতেই এই পদক্ষেপ কেন্দ্রের।
সূত্রের খবর, কেন্দ্রের কাছে খবর আছে, কেন্দ্র সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের টাকার একটি বড় অংশ বেশ কিছু অবিজেপি সরকার চুপি চুপি রাজ্যের প্রকল্পে খরচ করছে। মোদী সরকারের বিভিন্ন সড়ক যোজনা থেকে শুরু করে দেশের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামোগত প্রকল্পের টাকা রয়েছে। যার কোনও স্পষ্ট হিসাব কেন্দ্রকে দিচ্ছে না রাজ্য সরকারগুলি। মূলত ভোট কেনার সস্তা রাজনীতির জন্য কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকাগুলি নিয়ে নয় ছয় করছে বিরোধী রাজনৈতিক দলের গঠিত বিভিন্ন রাজ্য সরকার।
এমনকি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নামে এইসব টাকা নিয়ে মোচ্ছবও করা হচ্ছে বলে দাবি বিজেপির একাংশের। যদিও তৃণমূল সহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল রাজ্য সরকারের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বলে দাবি করলেও মানতে রাজি নয় কেন্দ্র। এবিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গত বছর জুলাই মাস থেকেই সরব হয়েছেন। এবার তার পদক্ষেপ শুরু হল।