সুভাষ পাল, সংবাদ কলকাতা: আপনি কি কম দামের মোবাইল সেট ব্যবহার করেন? আপনার ব্যবহৃত স্মার্ট ফোনে কি পাইরেটেড বা নকল অপারেটিং সিস্টেম চালু আছে? আপনি কি মোবাইল ফোনে ভোটার, আধার, প্যান কার্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস-এর ছবি তুলে রেখেছেন? আপনার মোবাইলে কি ব্যাঙ্ক একাউন্ট নাম্বার কিম্বা জরুরি ই-মেইল, নেট ব্যাংকিংয়ের পাসওয়ার্ড সেভ করে রেখেছেন? তাহলে কিন্তু মহা বিপদ। আর এই বিপদকে কিন্তু, আপনি নিজেই অজান্তে ডেকে এনেছেন। যখন তখন আপনার সর্বস্ব লুঠ হয়ে যেতে পারে। কারণ, বিপদ আপনার হাতের মুঠোয়। আপনার এইসব একান্ত ব্যক্তিগত ও গুরুত্বপূর্ণ সমস্ত তথ্য প্রতি মুহূর্তে চলে যাচ্ছে সাইবার দুর্বৃত্তদের কাছে। হ্যাকাররা আপনাকে রাতারাতি রাজমহল থেকে রাজপথে টেনে নামাতে পারে।
অনেক সময় দেখা যায়, বাজারে অনেক কম দামের স্মার্ট ফোন বিক্রি হয়। হতে পারে সেটা চাইনিজ সেট বা অন্য কিছু। সেগুলি বাইরে থেকে দেখতে হুবহু অ্যান্ড্রয়েড, উইন্ডোজ বা আইফোনের মতো। আর এখানেই লুকিয়ে বিপদ। এই সব কম দামের মোবাইল ফোনে থাকে না কোনও নিরাপত্তার বালাই। কারণ, এইসব ফোনে পাইরেটেড বা নকল অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। যার নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুবই দুর্বল প্রকৃতির হয়। ফলে আপনার ব্যক্তিগত সমস্ত গোপন তথ্য নিমেষে চলে যাচ্ছে অন্ধকার জগতে। হ্যাকাররা আপনার ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করতে এইসব পাইরেটেড বা নকল অপারেটিং সিস্টেমকে কাজে লাগাচ্ছে।
সম্প্রতি রাজ্য সরকারের তথ্য প্রযুক্তি দপ্তর এব্যাপারে একটি সমীক্ষা চালিয়েছে। সেই সমীক্ষায় উঠে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্তে জানা গেছে, সাইবার প্রতারকরা মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য হাতাতে মোবাইলের পাইরেটেড অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করছে। যার সঙ্গে সরাসরি যোগ রয়েছে ডার্ক ওয়েবের এক হাজারের বেশি ইন্টারনেট প্লাটফর্মের। আপনার মোবাইলে সামাজিক অনুষ্ঠান বা কোনও গুরুত্বপূর্ণ নথি, যে ছবিই তুলুন না কেন, ইন্টারনেট চালু হলেই, তা চলে যাচ্ছে অন্ধকার জগতের এই ইন্টারনেট প্লাটফর্মগুলিতে। ফলে গোপন কথাটি আর গোপন থাকছে না।
কিন্তু, এর সমাধান কি? কিভাবে হ্যাকাররা এইসব ডার্ক ওয়েব থেকে ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে? কোথায় বসে তারা এই কাজ করছে? তার কোনও কিনারাই করতে পারছেন না দুদে গোয়েন্দারা। অতএব বিপদ কিন্তু আপনার নিত্য সঙ্গী। এখনই সাবধান হোন। না হলে মহাবিপদ। সরকার বা প্রশাসন? কেউ আপনাকে বাঁচাতে পারবে না।