সুভাষ পাল, সংবাদ কলকাতা: এতদিন ব্যাঙ্ক একাউন্ট হ্যাকাররা এসবিআই সহ অন্যান্য গ্রাহকদের টাকা লোপাটের জন্য ব্যক্তিগত তথ্য চেয়ে ফোন করত। ব্যাঙ্কের লোক পরিচয় দিয়ে একাউন্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয় দেখাত। এরপর তাঁদের এটিএম নাম্বার ও পিন নাম্বার বা ওটিপি হাতিয়ে নিয়ে টাকা লোপাট করত। বেশিরভাগক্ষেত্রে বয়স্কদের টার্গেট করত এরা। সেই কৌশল অনেক পুরনো হয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন মানুষ ঠকতে ঠকতে গ্রাহকরাও আগের চেয়ে অনেক বেশি সতর্ক হয়ে গেছে। সেজন্য পুরনো পন্থা পরিবর্তন করছে হ্যাকাররা। এবার আর তারা ব্যক্তিগত তথ্য চেয়ে ফোন করার পরিবর্তে অনেক সহজ পন্থা অবলম্বন করছে। সেই ফাঁদে কোনও গ্রাহক একবার পা দিলেই সর্বনাশ! ব্যাংক একাউন্ট -এর টাকা খুইয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে যাচ্ছেন তিনি।
জানা গিয়েছে, হ্যাকাররা একাউন্ট লক হয়ে যাচ্ছে বলে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার নাম করে বা অন্য ব্যাঙ্কের আধিকারিক পরিচয় দিয়ে গ্রাহকদের নাম্বারে ফেক মেসেজ করে বিভিন্ন লিঙ্ক পাঠিয়ে দিচ্ছে। সেই লিঙ্কে জ্ঞাতসারে অথবা মনের ভুলে একবার ক্লিক করলেই গ্রাহকের ব্যক্তিগত ও গোপনীয় সমস্ত তথ্য হ্যাকারদের হাতে চলে যাচ্ছে। যার মাধ্যমে ব্যাংক একাউন্ট-এর টাকা অনায়াসে তুলে নিচ্ছে হ্যাকাররা। সরকার এই বিষয়টি নিয়ে মানুষকে সতর্ক করছে।
গ্রাহকদের কেউ এই ধরণের ইমেল বা মেসেজ পেলে PIB Fact Check সংস্থা সঙ্গে সঙ্গে ব্যাঙ্ককে জানাতে বলেছে। পাশাপাশি, এই ধরণের ইমেল বা মেসেজে কোনও উত্তর দিতে নিষেধ করা হয়েছে। প্রয়োজনে এসবিআই-এর report.phishing@sbi.co.in এই ইমেল আইডি-তে মেল করে ব্যাঙ্ককে সজাগ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এবিষয়ে সরকারের একটি হেল্পলাইন নম্বরও দেওয়া হয়েছে। ১৯৩০-তে ফোন করে গ্রাহকদের যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত এরকম ভুয়ো ইমেল বা এসএমএস-এ যে লিংক থাকে, সেটা ক্লিক করলে গ্রাহকদের সমস্ত গোপনীয় তথ্য হ্যাকারদের কাছে চলে যায়। যার ফলে হ্যাকাররা খুব সহজেই গ্রাহকদের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নেয়। আবার অনেক সময় কোনও সফটওয়্যারও ইনস্টল হয়ে যায়। যেটা থেকে পুরো সিস্টেম হ্যাকারদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। সেজন্য গ্রাহকদের খুব সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে এসবিআই সহ সব ব্যাঙ্কই বার বার সজাগ করে আসছে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিচ্ছে যে, তারা ফোন বা ইমেলের মাধ্যমে কোনও গ্রাহকের কাছে ব্যক্তিগত তথ্য চান না। যেটা গ্রাহকদের সুরক্ষা বিঘ্নিত করে। কিন্তু মানুষের ভয় ও কিছুক্ষেত্রে অজ্ঞতার কারণে প্রতারকদের ফাঁদে তাঁরা বারবার পা দিচ্ছেন। এই বিষয়ে সকলকে সজাগ করছে সরকার।
previous post