শঙ্কর মণ্ডল: অনুপ্রাণিত ব্যবসায়ী ও একটি বেসরকারী চ্যানেলের মালিক কৌস্তভ রায় গ্রেফতার। এতদিন যে চ্যানেলের মাধ্যমে বাংলার জনমতকে প্রভাবিত করাই শুধু নয়, চিটফাণ্ড কোম্পানীর মাধ্যমে জালিয়াতি; যা অনুপ্রেরণা পাওয়ার অন্যতম যোগ্যতা অর্জনের মাপকাঠি বলেই বিবেচনা করা হয়। সেই কৌস্তভ থেকে আরও কত তথ্য পাওয়া যায়, তা দেখার আছে। শোনা যায়, তৃণমূলের বিভিন্ন লেনদেনে সেটা জনপ্রতিনিধি কেনাবেচা থেকে শুরু করে বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসায় এই কৌস্তভ রায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতেন। এমনকি ওনাকে রাজনৈতিক মঞ্চে নেতার ভুমিকায় ভাষণ দিতেও দেখা গিয়েছে। বাংলায় অগণিত মানুষকে বোকা বানানোর জন্য সিপিএম, কংগ্রেসের বিরোধিতা হয়তো এব্যাপারেও দেখা যাবে। এই রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির সেটিং তত্ত্বকে প্রতিষ্ঠা করার আপ্রাণ চেষ্টা করা হবে। সেক্ষেত্রে বহু আঁতেল বিজেপি কর্মীও এই সেটিং নিয়ে কথা বলবেন। এই রাজ্যের অপদার্থ নেতাদের ত্রুটি থাকতে পারে।
কিন্তু ব্যাঙ্গালোরের সেটিংকে অস্বীকার করব কী করে? এই রাজ্যের সংবিধানকে দফারফা সেরে সমস্তরকম আর্থিক কেলেঙ্কারী সম্পন্ন করে পরিবারতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করতে বিপুলভাবে সফল তৃণমূল এখন সিপিএম কংগ্রেসের সঙ্গে একসাথে ডিনার সারছে। আসলে দুর্নীতি ইস্যুতে আজ সমস্ত পরিবারতান্ত্রিক দলগুলি এমনভাবে আষ্টেপিষ্ঠে জড়িত ও সেই সঙ্গে অপ্রাসঙ্গিক দেশবিরোধী শক্তি বামপন্থী নামাঙ্কিত কমিউনিষ্টরাও যোগ দিয়েছে, কেবলমাত্র নিজেদের বাঁচাতে।আর এই সমস্ত দলগুলোর জন্য মোদীজির কথামতো এদের লক্ষ্য Of the Family, By the Family, For the Family.
সুতরাং, এই দলগুলি এ রাজ্যে একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই লড়াই খেলা আর কতদিন বাংলায় চালাবে ও মানুষকে ধোঁকা দেবে? সিপিএম, কংগ্রেস একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের এই চিটিংবাজী চিত্রনাট্য দেখাতে অভ্যস্ত বছরের পর বছর ধরে।
লড়াই হবে একেবারে সরাসরি। কোনও মিথ্যার বেসাতি করে নয়। কে ভয় পেয়েছে বা কে ভয় পায়নি, সেটা দেখা যাবে প্রকাশ্য ময়দানে।তাই হিম্মত থাকলে সব দল একসঙ্গে ঘোষণা করুক, তারা এক। আর বিজেপির সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়ে আমার কোনও মাথাব্যথা নেই। বরং কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে এই রাজ্যের নেতারা যেভাবে ভুয়ো সংগঠন তৈরি করার চেষ্টা করছে, মানে যাকে তাকে ধরে এনে বুথ কমিটি গঠনের যে চেষ্টা করছে, আমি তার সঙ্গে একমত নই। বরং বহু অভিজ্ঞতা শেয়ার করে আমি প্রমাণ করে দেব যে, আন্দোলনই সংগঠন তৈরি করে। তা আন্না হাজারের আন্দোলনের মাধ্যমে আপ পার্টির সংগঠন তৈরিই হোক বা এনটিআরের আন্দোলনের ইতিহাসই হোক বা এই রাজ্যের মমতা ব্যানার্জীর আন্দোলনের মাধ্যমে তৃণমূল কংগ্রেস গঠনই হোক। সব ক্ষেত্রেই সংগঠন তৈরি হওয়ার উদাহরণ আছে।
তবে আবারও বলব, সেই আন্দোলন করতে হবে, যা মানুষকে স্পর্শ করে। আন্দোলনের ধারাবাহিকতা চাই। দু-একদিন মিটিং করলে বা মিছিল করলে তাকে আন্দোলন বলে না। সেই সঙ্গে বহু অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে কৃষক, শ্রমিক, যুবকদের যুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করতে হবে। আমি চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি, সংগঠন তৈরি করতে কোনও অসুবিধা হবে না। আমার কাছে কেবল পরিকাঠামো নেই। শুভেন্দু অধিকারীর কাছে এই পরিকাঠামো আছে। সেই সঙ্গে আন্দোলন করার সব রকম শক্তি আছে। যদিও যা করছে, তা যদি কন্টিনিউ করতে পারে, তাহলে এই রাজ্যে সফলতা সম্ভব।
লেখক সংযুক্ত হিন্দু ফ্রন্টের সভাপতি এবং প্রাক্তন বিজেপি নেতা। এই প্রবন্ধের মতামত ব্যক্তিগত।
previous post