18 C
Kolkata
January 21, 2025
রাজ্য সম্পাদকীয়

আদালত বারবার রাজ্য সরকারের গালে ঠাস ঠাস করে চড় মারছে

শঙ্কর মণ্ডল

পশ্চিমবঙ্গ বর্তমানে এক ভয়ঙ্কর অবস্থার সামনে দাঁড়িয়ে। এখানে সংবিধান, আইনের শাসন এখন কল্পনাও করা যাচ্ছে না।কেবল একমাত্র ভরসা আদালত। আর এই আদালতই বারবার এই রাজ্যের সরকারের গালে ঠাস ঠাস করে চড় মারছে। আর সেই চড় হজম করে অজিত মাইতির মত গণতন্ত্রের কলঙ্কময় অধ্যায়ের প্রতীক বিধায়করা পুলিশের কামড়ে দেওয়াকে সমর্থন করে চলেছে। পুলিশ মিথ্যা অভিযোগ করে যে জামিন অযোগ্য ধারা দিয়ে আন্দোলনকারীদের গ্রেফতার করেছে, আজ আদালত তাকে শুধু খারিজ করেছে তাই নয়, তার রায়ের মাধ্যমে এই রাজ্যের প্রশাসনের মোটিভ যে সম্পূর্ণ বেআইনি ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা কলঙ্কজনিত করেছে, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।এমনিতেই হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৪-র টেট উত্তীর্ণদের নম্বর প্রকাশের ক্ষেত্রেও যে অসম্পূর্ণ তালিকা পেশ করলেন আর এক অনুপ্রাণিত ডিগ্রিধারী গৌতম পাল, তা বাংলার শিক্ষা জগতের লজ্জা।
আর মাননীয় কলকাতার মেয়র তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম যত বলবেন, ততই আসামী নেতারা বিপদে পড়বেন তা আজকে আরও একবার প্রমাণিত হল। এর আগে পার্থ চ্যাটার্জির অপরাধ তাঁর একার নয়, সেটা আগে সমস্ত মন্ত্রীসভার দ্বায়িত্ব বলেই মন্তব্য করেছিলেন ফিরহাদবাবু। যদিও পরবর্তীকালে পার্থর দায় নেওয়ার জন্য তাকে দেখা যায় নি। ঠিক তেমনি, আজ বাঘ বলে সন্মানিত করে কেষ্টকে যে বিপদে ফেললেন সেটাই প্রমাণ হল।
যাই হোক, আজ এই বাংলা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রশাসন থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রীর গ্যালারি শো করা প্রশাসনিক বৈঠক, সবটাই বাংলাকে হীরক রাজার দেশে পরিণত করেছে। শুধুমাত্র এখানেই নয়, এই বাংলায় বর্তমানে এক নতুন কেলেঙ্কারির আবির্ভাব হয়েছে। ব্যাঙের ছাতার মত বাজারে বাজারে আলু পেঁয়াজের মত লটারির দোকান গড়ে উঠেছে। আর সেই দোকান থেকে কেবল কেষ্ট বা কেষ্টর মেয়ের মত লোকেরাই কোটি কোটি টাকার লটারি পেয়ে আর একটা নতুন কেলেঙ্কারির জন্ম দিয়েছে। সেটাও ক্রমশ প্রকাশ পাচ্ছে।
আর সরকারী টাকা নয়ছয় করে দুয়ারে সরকারের নাম করে ভোট কেনার পরিকল্পনাও এখন এই রাজ্যেকে উপহাসের ক্ষেত্রে পরিণত করেছে। আর বিভিন্ন প্রকল্পের ফর্ম যে এখন মুদিখানার দোকানে বিক্রি হচ্ছে, তা তো টেলিভিশন ক্যামেরাতেই দেখতে পেলাম। তাই সবদিক থেকে বিচার করেই বলতে বাধ্য হচ্ছি, এখানে নৈতিকতার ও সংবেদনশীলতা রক্ষা করাই একমাত্র চ্যালেঞ্জ।আর এসবের মধ্যে যখন মানুষের ফোকাস সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে, তখনই গোপণে চলছে জেহাদীদের প্রবল তৎপরতা। যাতে খুব দ্রুত এই বাংলাকে দখল করা যায়। বিভিন্ন অছিলায় তা প্রায়শই সামনে চলে আসে। একাধিক ঘটনা প্রবাহের মধ্যে, কখনও ধুলাগড়, কখনও বাদুড়িয়া, কখনও বেথুয়াডহরী, কখনও উলুবেড়িয়া, কখনো শলপ এবং সর্বশেষ কলকাতার মোমিনপুর। কিছুদিনের মধ্যেই সামনে চলে আসবে নতুন কোনও জায়গা। আসলে এগুলো সবটাই একটা ট্রেলার। আসল পিকচার হয়ত ১৯৪৬-র নোয়াখালির ন্যায় নতুন কোনও নোয়াখালি অপেক্ষা করছে। তাই এর প্রতিরোধ গড়ার জন্য চাই প্রতিরোধ বাহিনী। আর চিহ্নিত করতে হবে নোয়াখালি কাণ্ডের মদতদাতা এই জাতির অসৎ পিতাকে। আর তার জন্য স্মরণ করতে হবে আগামী ১৫ ই নভেম্বর শহীদ দিবসে মহান দুই নেতা নাথুরাম গডসে ও নারায়ণ আপ্তেকে।

লেখক সংযুক্ত হিন্দু ফ্রন্টের সভাপতি। মতামত ব্যক্তিগত।

Related posts

Leave a Comment