কাকদ্বীপ: ‘আগামী এক সপ্তার মধ্যে দেশ জুড়ে লাগু হবে সিএএ। গ্যারান্টি দিলাম।’ দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের এক জনসভা থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর গত রবিবার একথা বলেন। তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যেই রামমন্দির উদ্ঘাটন হয়েছে। আর আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ভারতবর্ষে সিএএ কার্যকর হবে। আজ এই মঞ্চ থেকে এই গ্যারান্টি দিয়ে গেলাম। পশ্চিমবঙ্গ সহ প্রত্যেকটা রাজ্যে সিএএ কার্যকর হবে। আপনারা সেটা দেখতে পাবেন। যাঁরা ১৯৭১ সালের পরে ভারতবর্ষে এসেছেন… এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, আপনাদের ভোটার কার্ড থাকলে, আধার থাকলে আপনারা নাগরিক। আপনি ভোট দিতে পারছেন, আপনি ভোট দেওয়ার নাগরিক। কিন্তু এখানে শুনেছি কয়েক হাজার মানুষকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীকে জবাব দিতে হবে, কেন এই মানুষদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হল। এরা সকলে মতুয়া সম্প্রদায়ের। এরা ভারতীয় জনতা পার্টির সমর্থক। তাই এদের ভোটার কার্ড করে দেওয়া হবে না।’
প্রসঙ্গত, এর আগে গতবছর কলকাতায় এসে সিএএ নিয়ে বড় দাবি করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিশ্লেষকদের মত, গত লোকসভা ভোটে মতুয়া ভোটের জোরে বাংলায় ভালো ফল করতে সক্ষম হয়েছিল বিজেপি। সেই মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক অক্ষত রাখতে সিএএ অস্ত্রে শান দিচ্ছে বিজেপি। তবে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি ২০১৯ সালে আইনে পরিণত হলেও তা এখনও দেশে কার্যকর হয়নি। এই আইনের নিয়ম তৈরি হয়েছে কি না, তাও নিশ্চিত করে বলেনি সরকার। এরই মাঝে সিএএ নিয়ে মতুয়াদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে। আবার সিএএ বিরোধিতায় সরব রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।
শান্তনু ঠাকুর বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী কেন বলছেন যে যাঁরা এসেছেন, তাঁরাই নাগরিক। নাগরিক যদি হয়, তাহলে পাসপোর্টের যাচাইকরণের জন্য যখন ডিআইবি-র কাছে যাওয়া হচ্ছে, ডিআইবি কেন ১৯৭১ সালের আগের দলিল চাইছে? সেই প্রশ্নের জবাব দিতে হবে পুলিশ প্রশাসনকে। আমাদের তো ভোটারকার্ড, আধার কার্ড, রেশন কার্ড দেখেই পাসপোর্টের ভেরিফিকেশন করা উচিত। এই সব রাজ্য সরকার রাজনীতির জন্য করছে। তবে যারা ১৯৭১ সালের পরে এসেছে, তাদের আমাদের নাগরিকত্ব প্রয়োজন। কারণ আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুরক্ষিত করতে হবে। যাতে তাদের কোনওদিন রোহিঙ্গাদের মতো বেরিয়ে না যেতে হয়। তাই কেন্দ্রীয় সরকার সিএএ কার্যকর করবে। এরপরে আর কোনও সরকারের ক্ষমতা থাকবে না যে আমাদের দেশ থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বার করে দেবে। এই কারণে সিএএ জরুরি। এবং আগামী এক সপ্তাহে তা হয়ে যাবে।’ ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন ঘনিয়ে আসতেই ফের উঠেছে সিএএ রব। এই আবহে রবিবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে পাশে নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর দাবি করলেন, আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে বাংলা সহ গোটা দেশে সিএএ কার্যকর হবে।
previous post