সংবাদ কলকাতা: রাজ্য জুড়ে সবার মুখে মুখে ঘুরছে একটি ভাইরাসের নাম। যে ভাইরাসটি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে গত এক মাস ধরে। অ্যাডিনো নামে এই ভাইরাসটি গত কয়েক সপ্তাহে প্রাণ কেড়ে নিয়েছে রাজ্যের বেশ কয়েকটি শিশুর। অথচ করোনা মহামারির সময় এই ভাইরাসটিকেই হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছিল। বিশেষ কয়েকটি গুণের কারণে এই ভাইরাস দিয়ে তৈরি হয়েছিল করোনার টিকা ‘কোভিশিল্ড’। কারণ এই ভাইরাসের মধ্যে রয়েছে বেশ কয়েকটি প্রতিরোধ ক্ষমতা। কিন্তু বিপদের বন্ধু ভাইরাসটিকেই এখন শত্রু হিসেবে ভাবতে শুরু করেছে রাজ্যবাসী। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে করোনার মতোই ঘরে ঘরে অ্যাডিনো মহামারির আকার নিয়েছে।
যদিও এই ভাইরাস নতুন নয়। দীর্ঘদিন ধরে মানব দেহে বিচরণ করে আসছে। যার ফলে মানুষ এতদিন ধরে কনজাংটিভাইটিসে আক্রান্ত হয়ে আসছে। চোখ ওঠা, চোখ লাল হওয়া বা জয়বাংলা আসলে এই রোগেরই উপসর্গ। এই অ্যাডিনো ভাইরাসের প্রভাবে টনসিলের সংক্রমণও দেখা দেয়। ফলে অ্যডিনোর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক আগেই মানুষের ভিতরে তৈরি হয়েছে। কিন্তু যে ভাইরাসের প্রতিরোধ ক্ষমতা মানুষের শরীরে রয়েছে, সেই ভাইরাস দিয়ে কোভিড টিকা তৈরি করলে কতটা কাজে লাগবে, তা নিয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মনে সংশয় দেখা দিয়েছিল।
সেজন্য সমান্তরালভাবে অ্যাডিনোর একটি উপপ্রজাতিকে বেছে নেওয়া হয়। যেটি মানবদেহে নয়, শিম্পাঞ্জীর দেহে রোগ ছড়াতে পারে এমন অ্যাডিনো ভাইরাস ব্যবহার করা হয়। তবে অ্যাডিনো নিয়ে মানুষ যতটা ভয় পাচ্ছে, ততটা ভয়ের কারণ নেই বলে মনে করেন চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা। অ্যাডিনো ভাইরাসের বিশেষ প্রজাতি থেকে তৈরি অ্যাস্ট্রাজেনেকার ‘কোভিশিল্ড’ টিকা বড়দের দেওয়া হলেও এইসব শিশুরা এখনও করোনার টিকা পায়নি।
সেই সঙ্গে করোনার টিকাকরণের সময় থেকে মাস্ক ব্যবহার প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি, সামাজিক দূরত্বও এখন মানা হয়না। যার ফলে বয়স্কদের খুব একটা কাবু করতে না পারলেও শিশুরা অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। বাড়ছে জ্বর, সর্দি, কাশি। তবে এটা নিয়ে খুব বেশি চিন্তার কারণ নেই বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
previous post