সংবাদ কলকাতা: আহা বেচারি! একটা গানের লাইন আছে, ‘বড় সাধ জাগে মনে’! অর্পিতা সন্তান নেওয়ার জন্য আবদার করেছিলেন পার্থের কাছে। তাতে আপত্তি করেননি প্রাক্তন মন্ত্রীমশাই। রাজি ছিলেন সত্তর ছুঁই ছুঁই পার্থ বাবু। ইডির চার্জশিটে তেমনটাই উল্লেখ আছে। বয়স না হয় একটু বেড়েছে। না হয় হাজার হাজার যোগ্য চাকরিপ্রার্থীর বাড়া ভাতে ছাই দিয়েছেন। তাতে কি! কত জনকে তো কত কি দিয়েছেন এই মন্ত্রীমশাই! তাই বলে কি বুড়ো বয়সে একটা সন্তান দিতে পারবেন না? কিন্তু, হঠাৎ কী যে কি হয়ে গেল! সাজানো বাগান শুকিয়ে গেল! সব আশায় জল ঢেলে দিল ইডি। বমাল ধরা পড়ে গেলেন বাংলার লায়লা মজনু।
রাজ্যের অনেকের মনেই প্রশ্ন, স্ত্রী তো সদ্য দু-তিন বছর প্রয়াত হয়েছেন। তার আগেই কখন তাঁর মনের আকাশে চাঁদ উঠেছিল ভদ্র মহিলা ঘুনাক্ষরেও জানতে পারেননি? তিনি কি বুঝতে পারেননি, তাঁর পতিদেবতা তলে তলে এতটা চুপা রুস্তম হয়ে উঠেছেন?
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সোমবার ১৭২ পাতার চার্জশিট পেশ করেছে ইডি। সেখানে পার্থ ও অর্পিতাকে একাধিক ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। চার্জশিট থেকে জানা গিয়েছে, ইডির তল্লাশির সময় অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে একটি নো অবজেকশন সার্টিফিকেট উদ্ধার হয়। কিন্তু, কী লেখা ছিল সেই সার্টিফিকেটে? পার্থ বাবুর স্বাক্ষর করা সেই শংসাপত্রে লেখা ছিল, অর্পিতা চাইলে একটি সন্তান দত্তক নিতে পারবেন। এতে পার্থের কোনও আপত্তি নেই। গত ২২ ফেব্রুয়ারির এই নথিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, পার্থ অর্পিতার ঘনিষ্ঠ পারিবারিক বন্ধু।
এব্যাপারে পার্থ বাবুকে ইডি জিজ্ঞাসা করলে তিনি বিষয়টি স্বীকার করে নেন। ইডির জেরার মুখে ধুরন্ধর পার্থ বলেন, অনেকেই তাঁর কাছে বহু বিষয়ে শংসাপত্র নিতে আসেন। তিনিও প্রয়োজন মতো শংসাপত্র দিয়ে দেন। ইডির চার্জশিটে এমনই উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু, প্রশ্ন হল সন্তান নেওয়া না নেওয়া তো একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়। এই আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত সচরাচর স্বামী স্ত্রীর মধ্যেই হয়ে থাকে। যদি দুজনের মধ্যে বন্ধুত্ব ছাড়া সেরকম কোনও সম্পর্ক না থেকে তাহলে পার্থের কাছে অর্পিতা অযথা কেন এই অনুমতি নিতে যাবেন?
এখন ইডির আধিকারিকদের মনে একটাই প্রশ্ন, এভাবে কতজন মহিলাকে ‘ঘনিষ্ঠ পারিবারিক বন্ধু’ লিখে সন্তান দত্তক নেওয়ার শংসাপত্র দিয়েছিলেন এই দিলদার?