সংকল্প দে, ডায়মন্ডহারবার: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গড় ডায়মন্ডহারবার। আর সেই গড়েই হুংকার ছাড়তে শোনা গেল আইএসএফ নেতা তথা ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীকে। মোনপুরের চাঁদনগরের মাঠে প্রকাশ্য জনসভা করে সেই মঞ্চ থেকে কার্যত ডায়মন্ডহারবার লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন নওশাদ। তিনি বলেন, ‘এই কেন্দ্র থেকে এবার আমি লড়ব। তাই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘন ঘন ডায়মন্ডহারবারে আসছেন। যখন আমি নমিনেশন ফাইল করব, তখন এই লোকসভার বিভিন্ন বিধানসভাগুলিতে বাড়ি বানিয়ে তিনি থাকবেন বলে জানান। মডেলের নামে যেভাবে শোষণ চলছে, সেই শোষণ থেকে মুক্তি দিতে পারে একমাত্র আইএসএফ। তৃণমূল আর বিজেপি ঠিক করুক দ্বিতীয় আর তৃতীয় কে হবে। ওদের মধ্যে বোঝাপড়া হলেও ডায়মন্ডহারবারে এক নম্বরে আইএসএফ আসছে।
ইন্ডিয়া জোট প্রসঙ্গে যদি বাম কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস থাকে, তাহলে সেই জোট থেকে আমি নিজেকে সরিয়ে নেব। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের দল বদলের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নীতীশ কুমারে উপর ভরসা রাখা কোনওমতেই সম্ভব নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনওমতেই চান না যে, আইএনডিআই-এর জোট শক্তিশালী হোক। তিনি সবসময় চান যে কেন্দ্রে বিজেপি সরকার থাকুক, তাহলে পশ্চিমবঙ্গে যে পকেট ভোট ব্যাঙ্কগুলিকে রেখেছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই পকেট ভোট ব্যাঙ্কের মাধ্যমে নিজের ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবে।’
ভাঙড় বিধানসভা একাধিকবার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে যে, আইএসএফ-এ বড়সড়ো ভাঙ্গন। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের কর্মী সমর্থকরা কেউ মন থেকে তৃণমূলে যোগদান করছে না। তাদেরকে বিভিন্নভাবে ভয় দেখিয়ে তৃণমূলে যোগদান করানো হচ্ছে। মন থেকে তারা আইএসএফ। ভোটের সময় তারা আইএসএফ-এ ভোট দেবেন।
সিএএ প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারের অবস্থান নিয়ে তিনি জোরালো আক্রমণ করে বলেন, অভিষেকবাবু সিএএ-এর বিপক্ষে ভোট দিয়েছে কিনা দেখিনি। বহু রাজনৈতিক মহলের এই প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে যে, ডায়মন্ডহারবার লোকসভা কেন্দ্রে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নওশাদ সিদ্দিকী ভোটে দাঁড়িয়ে আখেরে সুবিধা করে দেবে রাজ্যের বিরোধীদল বিজেপিকে। সেই প্রসঙ্গে নওশাদ সিদ্দিকী বলেন, তৃণমূলে ভোট দিয়ে লাভটা বা কি হচ্ছে, সিএএ-র বিরুদ্ধে যখন ভোটাভুটি হচ্ছিল, তখন অভিষেকবাবু কোথায় ছিলেন! তৃণমূলের সাতখানা সাংসদ সেই সময় অনুপস্থিত ছিল। বাংলার মানুষ সব বুঝতে পেরে গিয়েছে। তৃণমূলের অবস্থান যে জায়গায় এসে পৌঁছেছে, বরং তৃণমূল ভোট কেটে বিজেপিকে সাহায্য করে দেবে।
২০২৪ লোকসভা নির্বাচন থেকে তৃণমূলের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রার্থী না দিয়ে আইএসএফ-এর সঙ্গে বিজেপির সামনা সামনি লড়াই করার জন্য ছেড়ে দিক। মানুষ সব যোগ্য জবাব দিয়ে দেবে। কার্যত বলা যেতেই পারে, এদিন থেকেই অভিষেক গড়ে নিজের নির্বাচনী প্রচার শুরু করে দিলেন নওশাদ সিদ্দিকী।