November 1, 2025
কলকাতা দেশ

অভিনেত্রী ইশা খুনের কিনারা, উদ্ধার আগ্নেয়াস্ত্র

সংবাদ কলকাতা: অবশেষে ঝাড়খণ্ডের অভিনেত্রী ইশা খুনের কিনারা করল বাগনান থানার পুলিশ। তদন্তে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে, স্বামী প্রকাশই খুন করেছে ইশাকে। একটি মোবাইলের সূত্র ধরে জেলবন্দি প্রকাশকে জেরা করতেই প্রকৃত ঘটনা সামনে আসে। প্রকাশের স্বীকারোক্তি পাওয়ার পর ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু দূরে উদ্ধার হয় ইশার খুনে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রটি। উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রটি ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

হাওড়া গ্রামীণ জেলার পুলিশ সুপার স্বাতী ভাঙালিয়া বলেন, ইশা ও তাঁর তিন বছরের শিশুকন্যাকে নিয়ে রাঁচি থেকে কলকাতায় আসছিল প্রকাশ। ২৮ ডিসেম্বর ভোরের দিকে মেয়ে কেঁদে ওঠে। সেই সুযোগ কাজে লাগায় প্রকাশ। কারণ সে অনেক আগে থেকেই ইশাকে খুনের পরিকল্পনা করে। শুধু সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। তাঁদের মেয়ে কেঁদে উঠতেই দুজনকে সামনের সিট থেকে পিছনের সিটে পাঠিয়ে দেয়। ইশা মেয়েকে ঘুম পাড়ানোর পর নিজেও ঘুমিয়ে পড়েন। এই সুযোগে বাগনানের চন্দ্রপুর এলাকায় ১৬ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে একটি নির্জন স্থানে গাড়ি থামায়। সেখানে ঘুমন্ত অবস্থায় ইশাকে গুলি করে প্রকাশ। প্রমাণ লোপাটের জন্য ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু দূরে একটি ঝোঁপের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্রটি ফেলে দিয়ে চলে যায়। ইশার সঙ্গে অন্য পুরুষের সম্পর্ক রয়েছে। এই সন্দেহ থেকেই ইশাকে খুন করে প্রকাশ। এমনটাই জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার স্বাতী ভাঙালিয়া।

প্রসঙ্গত পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিজের প্রথম বিয়ের কথা লুকিয়ে গিয়ে ২০০৯ সালে ইশা আলিয়া ওরফে রিয়া কুমারীকে বিয়ে করে প্রকাশ। এমনকি তার চাকরি বা ব্যবসা নিয়েও মিথ্যা তথ্য দিয়েছিল ইশাকে। আদতে সে চাকরি বা ব্যবসা কিছুই করত না। খুনের মাস চারেক আগে ইশার নামে থাকা ফ্ল্যাট, বিউটি পার্লার, গাড়ি সবই প্রকাশ নিজের নামে করে নেয়। এমনকি ইশার টাকা নিয়ে গোপনে প্রথম পক্ষের স্ত্রীর সংসার চালাতো। পরে জানাজানি হতেই অশান্তি শুরু হয়। দুজনের সম্পর্কে ভাঙ্গন ধরে। ইতিমধ্যে প্রকাশ ইশা ও তার প্রথম পক্ষের স্ত্রীকে নিয়ে একসঙ্গে থাকতে চেয়েছিল। এতে তীব্র আপত্তি জানায় ইশা। এতে সম্পর্কের আরও অবনতি হয়। এরপর বেশ কয়েকমাস আগেই ইশাকে খুনের পরিকল্পনা করে প্রকাশ। সেইমতো একটি আগ্নেয়াস্ত্রও জোগাড় করে সে। এই অস্ত্র জোগাড়ে সহযোগিতা করে মোহিত ও সন্দীপকুমার সিং। পুলিশ সুপার বলেন, প্রকাশ মাঝেমধ্যেই ইশার উপর অত্যাচার চালাত। এবিষয়ে রাঁচি থানায় অভিযোগও করে ইশা। খুনের ঘটনার পর প্রকাশ পুলিশকে অসহযোগিতা করে। বিভিন্নভাবে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। এমনকী গাড়ি থেকে সন্তানের ফোন উদ্ধার হওয়ার পর পুলিশকে ফোনের পাসওয়ার্ড ভুল বলে। পরে ওই ফোন খোলার পর সবটা পরিষ্কার হয়ে যায়।

Related posts

Leave a Comment