কাকদ্বীপ, ২৪ সেপ্টেম্বর: পৃথিবীর সব থেকে বড় ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরবন। অক্সিজেনের সম্ভার যোগায় এই ম্যানগ্রোভ অরণ্য। জীব বৈচিত্রে বিশ্বে অন্যতম এই বাদাবন। সেই সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্য ধীরে ধীরে ধ্বংসের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। অবাধে শেষ করে করে দেওয়া হচ্ছে ম্যানগ্রোভ অরণ্য। ম্যানগ্রোভ কেটে কোথাও গজিয়ে উঠছে মাছের ভেড়ি, আবার কোথাও ঘর-বাড়ি। এমনকি হোটেল-রেস্তোরাঁও। সুন্দরবনের মধ্যে থাকা দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলবর্তী এলাকায় দিনের পর দিন অবৈধভাবে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে কাঠের মিল। বনবিভাগ ও সরকারি কোনো ছাড়পত্র ছাড়াই গজিয়ে উঠেছে এই কাঠের মিল গুলি। এবার সেই অবৈধ্য কাঠের মিল বন্ধ করার লক্ষ্যে অভিযান শুরু করলেন জেলার বিভাগীয় বনদপ্তর।
সুন্দরবন পুলিশ জেলার পুলিশ ও বনবিভাগের যৌথ উদ্যোগে সুন্দরবন পুলিশ জেলার বিভিন্ন এলাকায় এই অবৈধ কাঠের মিলে অভিযান শুরু হয়েছে। অবৈধ ও বেআইনিভাবে কাঠের মিল চালানোর অভিযোগে ৩০ টি মিল বন্ধ করা হয়েছে ইতিমধ্যে। বনবিভাগ সূত্রে খবর দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন প্রান্তে মোট ১১৬ টি কাঠের মিল রয়েছে। এর মধ্যে প্রচুর মিল রয়েছে বেআইনি ও অবৈধ। সেই বেআইনি ও অবৈধ মিলগুলি বন্ধ করার লক্ষ্যে এই অভিযান চালানো হচ্ছে। সুন্দরবনের গভীর জঙ্গল লাগোয়া বেশ কিছু কাঠের মিল রয়েছে। এই কাঠের মিলগুলির বিরুদ্ধে অভিযোগ, বনবিভাগের অনুমতি ছাড়াই জঙ্গল থেকে অবাধে গাছ কেটে নিয়ে আসা হচ্ছে যথেচ্ছ ভাবে।
এছাড়াও কিছু কিছু কাঠের মিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ বেআইনিভাবে কাঠের মিলে রেলের পাত ব্যবহার করা হচ্ছে। অসাধু ব্যবসায়ীদের হাত থেকে সুন্দরবনকে বাঁচাতে এবার নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। আদালতের নির্দেশে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন প্রান্তে একাধিক জায়গায় বনবিভাগের পক্ষ থেকে অভিযানও চালানো হয়। জেলার অতিরিক্ত বন আধিকারিক এর নেতৃত্বে এই অভিযান চালানো হয়।
এ বিষয়ে জেলার অতিরিক্ত বনআধিকারিক(এডিএফ্ও) চিন্ময় মুর্মু বলেন, আদালতের নির্দেশে বিভিন্ন অবৈধ ও বেআইনি কাঠের মিলগুলিতে অভিযান চালানো হচ্ছে। যে সকল কাঠের মিল গুলির বৈধ কাগজ নেই সেই সকল কাঠের মিলগুলিকে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি অনেক কাঠের মিলের বৈধ কাগজপত্র রয়েছে কিন্তু তারা বেআইনি কার্যকলাপ চালাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে সেই সকল কাঠের মিলকেও বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। সুন্দরবনকে বাঁচাতে এইরকম অভিযান আগামী দিনেও চালানো হবে। কোনোমতেই জঙ্গলকে ধ্বংস করতে দেওয়া যাবেনা।
next post