অভিজিৎ হাজরা, উলুবেড়িয়া, হাওড়া: উলুবেড়িয়া মহকুমা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবহেলা আর অযত্নে পড়ে আছে একটি লেটার বক্স। জানা যায়, এটি রাণী ভিক্টোরিয়ার সময়ে। এই ‘SUTTI ‘ লেটার বক্স তথা ক্রাউন টপ লেটার বক্স।
১৮৫৪ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি পোস্ট অফিস অ্যাক্ট চালু করার পরে ই ১৮৫৭ সালে রাণী ভিক্টোরিয়ার শাসনভার গ্রহণ করলে, এই ধরণের লেটার বক্স ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থানের সঙ্গে দ্রুত ডাক যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে স্থাপন করেছিলেন। ‘ SUTTIE & CO ‘ নামক একটি সংস্থা ১৮৫৬ থেকে ১৮৫৭ সালে স্কটল্যান্ডে এই লেটার বক্স তৈরি করে।
রাণী ভিক্টোরিয়ার সময়ে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের সাথে উলুবেড়িয়াকে ডাক ব্যবস্থার সাথে যুক্ত করতে এই ‘ SUTTIE ‘ লেটার বক্স স্থাপন করেছিলেন। যেখানে এই লেটার বক্সটি স্থাপন করা হয়েছিল সেই স্থানটি বর্তমানে উলুবেড়িয়া মহকুমা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে।
বর্তমানে এই লেটার বক্সটি ব্যবহার যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও অবহেলা আর অযত্নে পড়ে আছে। লেটার বক্সটি পথচারী ও উলুবেড়িয়ায় আসা বিভিন্ন মানুষদের চক্ষের আড়ালে থেকে গেছে ফল বিক্রেতা ও হকারদের দখলের ফলে। এই লেটার বক্সটির সামনে ফল বিক্রেতা ও অন্যান্য হকাররা লেটার বক্সটিকে আড়ালে রেখে তাদের পসরা সাজিয়ে বসছেন প্রতিদিন।
উলুবেড়িয়ার বুদ্ধিজীবী মহল অভিযোগের সুরে বলেন, ‘মহকুমা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এই অবহেলিত ও অযত্নে পড়ে থাকা লেটার বক্সটিকে সংরক্ষণ করার জন্য মহকুমা প্রশাসকের পক্ষে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এই লেটার বক্সটির কয়েক হাত দূরত্বে আছে উলুবেড়িয়া আদালত ও সংশোধনাগার। কয়েকশো ফুট দূরত্বে আছে উলুবেড়িয়া রবীন্দ্রভবন। যেখানে সরকারি ও বেসরকারিভাবে নানা অনুষ্ঠান হয়। সেই অনুষ্ঠানগুলিতে সাংসদ, বিধায়ক, মন্ত্রী প্রশাসনিক আধিকারিকবৃন্দরা উপস্থিত থাকেন। কয়েকশো ফুট দূরত্বে উলুবেড়িয়া পৌরসভা কার্যালয় আছে। আছে উলুবেড়িয়া মহকুমা পুলিশ সুপার-এর কার্যালয় ও উলুবেড়িয়া থানা। এত প্রতিষ্ঠান থাকায় নিয়মিত এই স্থান দিয়ে প্রশাসনিক আধিকারিকবৃন্দ, সাংসদ, বিধায়ক, মন্ত্রীদের আসা যাওয়া থাকলেও তাঁরা এই ঐতিহাসিক লেটার বক্সটি সংরক্ষণের কোনও উদ্যোগ নেন নি।’
বুদ্ধিজীবী মহলের দাবি, ‘এই লেটার বক্সটিকে সঠিকভাবে সংরক্ষণ ও সুরক্ষিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, প্রশাসন, উলুবেড়িয়া পৌরসভা, সাংসদ-বিধায়ক ও মন্ত্রী যেন ব্যবস্থা গ্ৰহণ করেন’।