বিশেষ সংবাদদাতা, জয়নগর: আবারও খবরের শিরোনামে উঠে এল জয়নগর। স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে শুধুমাত্র এই সন্দেহের বশে স্ত্রীর গলার নলি কেটে খুন করল স্বামী। শুক্রবার এমনই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর থানার অন্তর্গত হরিনারায়নপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নলিকাটা মোড় এলাকায়। মৃত ওই গৃহবধুর নাম অপর্ণা বৈদ্য (২৮)। এই ঘটনার পর পলাতক স্বামী। অভিযুক্ত স্বামীর খোঁজে চলছে তল্লাশি। খবর পাওয়ার পরই ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায় জয়নগর থানার পুলিশ। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৭ বছর আগে মগরাহাট এলাকার বাসিন্দা পেশায় রাজমিস্ত্রি পরিমল বৈদ্যর (৩৫) সাথে বিয়ে হয় অপর্ণা বৈদ্যের। সম্প্রতি স্মার্টফোনে সোশ্যাল মিডিয়ায় রিলস বানাত অপর্ণা। আর তারই সুবাদে বেশ কিছু বন্ধুবান্ধব ছিল তাঁর। আর এই সোশ্যাল মিডিয়ার বন্ধু-বান্ধবের সাথে ফোনে গল্পে ব্যস্ত থাকত। তারই জেরে প্রায় সময় বাড়িতে অশান্তি লেগেই থাকত। অপর্ণার একটি ছেলে ও একটি মেয়ে রয়েছে। ছেলেটি সপ্তম শ্রেণীতে পড়াশোনা করে এবং মেয়েটি নার্সারিতে পড়ে। বেশ কিছুদিন আগে এই সোশ্যাল মিডিয়াকে কেন্দ্র করে দম্পতির মধ্যে অশান্তি শুরু হয়েছিল। এই অশান্তির মাঝখানে বেশ কিছুদিন স্বামীকে ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে থাকত অপর্ণা।
বেশ কিছুদিন হয়েছে অপর্ণা আবারও পরিমলের বাড়িতে এসে থাকতে শুরু করেন। এদিন সকালে সোশ্যাল মিডিয়াকে কেন্দ্র করে আবারও ওই দম্পতির মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। কিন্তু এই করুণ পরিণতি হবে কেউ বুঝে উঠতে পারেননি। এ বিষয়ে অপর্ণা ও পরিমলের ছেলে অয়ন বৈদ্য জানায়, প্রায়ই বাবা-মার মধ্যে মোবাইল ফোনকে কেন্দ্র করে ঝামেলা লেগেই থাকত। প্রায় সময় বাবা মাকে মেরে ফেলার হুমকিও দিত। এদিন আমি টিউশন পড়তে গিয়েছিলাম। টিউশন থেকে যখন বাড়ি ফিরেছি, ঘরের মধ্যে ঢুকে দেখি রান্নাঘরে মায়ের রক্তাক্ত দেহ পড়ে রয়েছে। বাবা নেই, কোথায় পালিয়ে গিয়েছে। আজ আমি যখন টিউশন পড়তে যাচ্ছিলাম তখনও বাবা-মার মধ্যে ঝামেলা হচ্ছিল। এই বলে কান্নায় ভেঙে পড়ে অয়ন।
মৃতদেহের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে রক্তমাখা ছুরি। কী কারণে এই খুন, তা খতিয়ে দেখছে জয়নগর থানার পুলিশ। পাশাপাশি অভিযুক্ত পরিমল বৈদ্যের খোঁজে চলছে তল্লাশি।
previous post